পোড়া বাড়ির সামনে থেকে কাফির আলটিমেটাম, যে সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি

 


কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফি বলেছেন, ‘আমার আলটিমেটাম সাত দিনের। বিচার না পেলে আমি সাত দিনের মাথায় রাজপথে দাঁড়াবো। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আগুনে পোড়া নিজ বাড়ির সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের জেরেই তার বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফি। তিনি বলেন, ‘৩২ নম্বরের সামনে আমি বুলডোজারের সামনে স্লোগান দিয়েছি- ছি ছি হাসিনা, লজ্জায় বাঁচি না। সেদিন আওয়ামী লীগের দোসররা ঘোষণা দিয়েছিল যে, যারা ৩২ পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হবে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রথম আক্রোশের শিকার আমি। এটাই তা প্রমাণ করে।’

তিনি বলেন, ‘এটা এই সরকারের ব্যর্থতা। আমি চাই, এই সরকার আরও শক্তিশালী হোক। যদি এ সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা বলুক। তাহলে এ দেশের সাধারণ জনগণ বিপ্লবী সরকার গঠন করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এ সরকারকে ৭ দিনের আলটিমেটাম দিলাম। এই ৭ দিনের মধ্যে যদি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুর্বৃত্তদের আটক করাসহ আমার বাড়ি পুনরায় তৈরি করতে না পারে, তাহলে আমি ঢাকা-কলাপাড়া রাজপথে বিপ্লবী সরকারের ডাক দেব।’

এর আগে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে কাফির বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় তার মা-বাবাসহ পরিবারের ছয় সদস্য ঘরের মধ্যেই ছিলেন। বাড়ির সবাই নিরাপদে ও অক্ষত আছে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই আগুন ‘পরিকল্পিত’ বলে অভিযোগ করেছেন কাফি।

নুরুজ্জামান কাফির বাবা মাওলানা মো. এ বি এম হাবিবুর রহমান বলেছেন, ‘বাইরে থেকে দরজা আটকে ঘরে আগুন দেয়া হয়। আমাদের আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্যই এমন নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এর তদন্তপূর্বক বিচার চাই। যে যার মতো করে দরজা ভেঙে বের হয়েছি, কিছু নেই। সব শেষ হয়ে গেছে।’

আগুনে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান এবিএম হাবিবুর রহমান। কাফির প্রতিবেশী ওয়ালি উল্লাহ ইমরান অভিযোগ করেন, ‘এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। কারণ জানালার বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগানো ছিল। বাড়ির সবাইকে এক কাপড়ে ঘর থেকে বের হতে হয়েছে। কোনোরকম জানে বেঁচে গেছেন তারা।’  

কলাপাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো. ইলিয়াস হোসাইন জানিয়েছেন, ‘রাত সোয়া ২টার দিকে আমাদের মোবাইলে কল আসে নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুন লেগেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা দ্রুত আগুন লাগার স্টেশনে চলে যাই। যাওয়ার পর দেখি আগুন সিলিংয়ে উঠে গেছে। আমরা সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যই আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হই।’

তিনি আরও জানান, ‘পাশের গোয়াল ঘরটাকে নিরাপদ রাখতে পেরেছি। মানুষের কোনও ক্ষতি হয়নি। বাড়ির সবাই নিরাপদে ও অক্ষত আছে।’

প্রসঙ্গত, নুরুজ্জামান কাফির গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রজপাড়া গ্রামে। তার বাবা রজপাড়া দ্বীন-এ এলাহী দাখিল মাদরাসার সুপার। তিনি করোনাকালে ভাঙা একটি বাড়িতে মশার কয়েল জ্বালিয়ে মাটিতে বসে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে আলোচনায় আসেন। এবছর বইমেলায় তার একটি কবিতার বই নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

Previous Post Next Post