সব উল্টো ঘটছে, ভারতীয়দের স্বপ্ন ভাঙতেই যেন এলেন ট্রাম্প

 


এইচ-ওয়ানবি ভিসা কর্মসূচির আওতায় দক্ষ বিদেশি কর্মীদের কাজ করার সুযোগ যক্তরাষ্ট্র সরকার। এ পর্যন্ত যারা এইচ-ওয়ানবি ভিসা পেয়েছেন, তাদের ৭২ শতাংশই ভারতীয় নাগরিক। এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন, তাদের অনুপাত ১২ শতাংশ। ২০২৩ সালে এই ভিসায় আসা বেশিরভাগ কর্মীই ছিলেন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে দক্ষ। তাদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ কম্পিউটার-সম্পর্কিত চাকরিতে ছিলেন, যাদের বার্ষিক গড় বেতন এক লাখ ১৮ হাজার ডলার। এমন উচ্চ বেতনের চাকরির স্বপ্ন দেখেন ভারতের কোটি তরুণ। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন ভারতীয়দের সেই স্বপ্নকে ভেস্তে দেওয়ার জন্য সব বন্দোবস্তই করেছেন। আর এর কারণ দীর্ঘদিন ধরে ভিসানীতিকে ঘিরে ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা। অথচ, ভারতীয়রা ভেবেছিলেন— ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তাদের জন্য আরও ভালো হবে। কিন্তু ঘটছে সব উল্টো।

কারণ আমেরিকার প্রযুক্তি খাতে মূলত বিদেশি কর্মীদের ব্যাপকহারে নিয়োগ দেওয়া হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প একসময় এইচ-ওয়ানবি ভিসা কর্মসূচির সমালোচনা করলেও ক্ষমতা গ্রহণের আগেই এই ভিসা কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়ে তা আবারও চালু করেছেন।

এর পেছনের কারণটি অবশ্যই ধনকুবের বন্ধুর মন রক্ষা করা। কারণ টেরসা প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক এই ভিসা চালুর একনিষ্ঠ সমর্থক। তার মতে, প্রতিভাবান ইঞ্জিনিয়ারদের খুঁজে আনতে হলে এইচ-ওয়ানবি ভিসা তার একমাত্র চাবিকাঠি। তার চাপেই মূলত এই ভিসা কর্মসূচি আবারও চালু করতে একমত হয়েছেন ট্রাম্প।

দেশের জনমত জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে অভিবাসন এক দশমিক ৬ মিলিয়ন বেড়েছে, যা ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অভিবাসীরা এখন জনসংখ্যার ১৪ শতাংশেরও বেশি। আর এ সংখ্যা ১৯১০ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। এদিকে আমেরিকায় অভিবাসনের দিক থেকে মেক্সিকোর পর ভারতের অবস্থান। অনেক আমেরিকান আশঙ্কা করছেন, অভিবাসনের এই ঊর্ধ্বগতি সেদেশের চাকরির বাজারকে তাদের জন্য সংকুচিত করবে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষাগত বিনিময় সম্পর্কে ‘ওপেন ডোরস’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে আমেরিকায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের শীর্ষস্থানীয় উৎসস্থল হিসেবে চীনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। তাদের সংখ্যা তিন লাখ ৩১ হাজার ৬০২। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ঋণের ওপর নির্ভর করে দেশটিতে পড়তে এসেছে এবং যেকোনোভাবে ভিসা আটকে গেলে তাদের পরিবার বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।

Previous Post Next Post